পটুয়াখালীর গলাচিপায় উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ঝাড়ু মিছিলকে কেন্দ্র করে রবিবার সন্ধ্যায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহিনের সংবাদ সম্মেলনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ অফিসে হামলায় সংবাদ সম্মেলন ভÐুল।
iরবিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রের অনুসারীরা আওয়ামী লীগ অফিসের চেয়ার ভাংচুর করে হামলা চালিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে এবং মরিচের গুড়া ছিটিয়ে দেয়। এতে সাংবাদিক ও আওয়ামীলীগ নেতা-কর্মীসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে হামলায় প্রেসক্লাব সভাপতি ইত্তেফাক সংবাদদাতা মলয় দত্ত, মাই টিভির হাসান এলাহী, মোহনা টিভির সোহাগ রহমান, আনন্দ টিভির সোহেল আরমান, ভোরের পাতার মোহাম্মদ হাফিজ, দৈনিক সন্ধ্যাবাণীর রুবেল আকন, নিউন্যাশনের সঞ্জিব সাহা, সিএনএন ও এশিয়ান টিভির দক্ষিণ প্রতিনিধি জসিম উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, যুবলীগ নেতা লিয়াকত, কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা সমির কৃষ্ণ পাল, সাবেক কাউন্সিলর বশার প্যাদা, পৌর যুবলীগ সদস্য কবির, আলমগীর হোসেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা ইদ্রিস মেম্বার, যুবলীগ নেতা সোহাগ প্যাদা আহত হন। এরা সকলেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। হামলার পর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ নেতৃবৃন্দ পুলিশের সহযোগিতায় দলীয় অফিস ত্যাগ করেন।
এ ঘটনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত গুরুতর হতাহতের সঠিক খবর পাওয়া যায়নি এবং দু’পক্ষই আওয়ামীলীগ অফিস চত্ত¡রের দুই পাশে অবস্থান করে রয়েছে। এদিকে সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক সন্তোষ কুমার দে ও সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা টিটো। তারা জানান, এ বিষয় জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামীগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন – বাবার বন্ধুর কর্তৃক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ
হামলার আগে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মাদ সাহিন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগে আজ মিছিল হয়েছে তার কোন সত্যতা থাকলে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তদন্ত করে বিচার করবে। আমি যে কথাগুলো বলেছিলাম সে সময় সভাপতি ও সম্পাদকসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। আমি কাউকে অশালীন কোন কথা বলিনি। হামলার পরে তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে কোন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা করতে পারে না। বিএনপি জামাতের লোকেরা আওয়ামী লীগ অফিসে হামলা করেছে।
এ বিষয়ে গলাচিপা পৌর মেয়র আহসানুল হক তুহিন বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের সংবাদ সম্মেলন শেষে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান (বোন) নিতু ও আমার মা উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী নুরুন্নাহার বেগম অফিসে যায়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান তাদেরকে অফিসে ঢুকতে বাধা দেওয়ার জন্য তার অনুসারীদের নির্দেশ দেয়। তখন আমি সেখানে উপস্থিত হলে এতে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা টিটো উপস্থিত সংবাদ কর্মীদের বলেন, আওয়ামী লীগ অফিসে নেতৃবৃন্দ ও সংবাদ কর্মীদের উপর জঘণ্যতম এমন হামলা আর কখনো দেখিনি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সন্তোষ কুমার দে বলেন, আজকের এ ঘটনাটি জেলা ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দদের অবহিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ এমআর শওকত আনোয়ার ইসলাম বলেন, বিকেলে একটি পরিস্থিতির কারণে একটি ঘটনা ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এখন পর্যন্ত কোন পক্ষই অভিযোগ করেননি।
এদিকে এর আগে রবিবার বিকেলে মহিলা আওয়ামী লীগের কর্মীদেরকে অশ্লিল মন্তব্য করায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মা সাহিনের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিল করেছে উপজেলা মাহিলা আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ওয়ানা মার্জিয়া নিতু এ মিছিলের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন।