প্রতিনিয়ত স্কুলে যাতায়াতের পথে মোঃ ইমরান ফকির (২০) ইভটিজিং (কু-প্রস্তাব) দিয়ে উত্ত্যক্ত করতো নাবালিকা মাদ্রাসা পড়ুয়া এক ছাত্রীকে। বাড়িতে গিয়ে সেই ঘটনার কথা পরিবারের লোকজনদের জানিয়েছিল ওই ছাত্রী। পরে ওই ছাত্রীর মামা উত্ত্যক্তের ঘটনার বিষয়ে ইমরান ফকিরকে জিজ্ঞেসা করলে দুজনের ভিতরে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
পরবর্তীতে ৬ এপ্রিল সোমবার গলাচিপা উপজেলার পানপট্টি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে ইমরান ফকির ও তার সাথে থাকা ৮/১০ জন মিলে মোঃ নাদিম (২০),মোসাঃ নাসিমা বেগম (৫০), গোলেনুর বেগম (৩০), নুর জাহান বেগম (৭০) সহ ৬/৭ জনের উপর হামলা চালায়। এতে ৩/৪ জন গুরুতর আহত হয়। আহতদের চিকিৎসার জন্য গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে মেয়ের মামা নাদিম বলেন, আমার ভাগ্নি মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল, এবিষয়ে আমার ভাগ্নি তার মাকে যানায়, তার মা আমার বোন আমাকে বলার পর আমি এ কু-প্রস্তাবের বিষয়ে ইমরান ফকিরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে আমার সাথে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে একপর্যায় তার সাথে হাতাহাতি হয়। পরে ৬ এপ্রিল ইমরান ফকির সহ তার সাথে থাকা ৮/১০ জন সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপরে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, বাশের লাঠি ও ধারালো দাও নিয়া হামলা চালায়, আমার সাথে থাকা মোবাইল ও গলায় থাকা চেইন নিয়ে যায়। আমাকে বাঁচাতে এসে আমাদের পরিবারের ৩/৪ জন গুরুতর আহত হয়।
মেয়ের মা গোলেনুর বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমার মেয়েকে ইমরান ফকির বিভিন্ন ধরনের কু-প্রস্তাব দিয়ে আসছিল, আমার মেয়ে আমাকে জানানোর পরে ছোট ভাই নাদিমকে আমি যানাই, নাদিম এ বিষয়ে ইমরান ফকির জিজ্ঞাসা করলে তাদের ভিতরে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়, সেই ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ইমরান ফকির আমার ছোট ভাই মোঃ নাদিম (২০), মোসাঃ নাসিমা বেগম (৫০), গোলেনুর বেগম (৩০), নুর জাহান বেগম (৭০) এর উপর মরিচের গুড়া ছিটিয়ে হামলা চালায়।
মামলার বাদী মোঃ বাবুল হাং বলেন, আমার নাতনীকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কৌশলে কু-প্রস্তাব দিলে দিয়ে আসছিলো মোঃ মোয়াজ্জেম ফকিরের ছেলে মোঃ ইমরান ফকির (২০), আমার নাতনী তার মায়ের কাছে এ বিষয়টি বললে, তার মামা নাদিম শুনে এ ঘটনার বিষয়ে ইমরান ফকিরকে জিজ্ঞেস করতে গেলে তাদের ভিতরে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। এ ঝগড়াকে কেন্দ্র করে ইমরান ফকির ৬ এপ্রিল পূর্বের পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র লোহার রড, বাশের লাঠি ও ধারালো দাও নিয়া প্রথমে মোঃ নাদিম (২০) এর উপর হামলা চালায় পরে তাকে বাচাতে মোসাঃ নাসিমা বেগম (৫০), গোলেনুর বেগম (৩০), নুর জাহান বেগম (৭০) সহ তাদের বাড়ির ৬/৭ জন লোজ ছুটে আসলে তাদের উপরে মরিচের গুড়া ছিটিয়ে তাদের উপরও হামলা চালায়। এতে মোসাঃ নাসিমা বেগম এর গলায় থাকা চেইন ও কানের দুল নিয়ে যায়, এ ঘটনায় ৩/৪ জন গুরুতর আহত হয়। তাদের গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ১০ জনকে আসামি করে গলাচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বিবাদীরা হলো- মোঃ ইমরান ফকির (২০) পিং-মোঃ মোয়াজ্জেম ফকির, মোঃ নবীন ফকির (২১), মোঃ মনির ফকির (২০), মোঃ মোয়াজ্জেম ফকির (৪০), মোঃ মস্তফা ফকির (৪৫), মোঃ মুজাম্মেল ফকির (৫৫), মোঃ রিমন (২২), মোসাঃ মিনারা বেগম (৩৭), মোসাঃ মমতাজ বেগম (৪০), তাসলিমা বেগম (৪০), সর্ব সাং- তুলারাম, ৭নং ওয়ার্ড, ইউ/পি-পানপট্টি, থানা-গলাচিপা।
আরও পড়ুন- গলাচিপায় মহাজনী সুদী ব্যবসায়ী সুশান্ত কুমার দাসের বিরুদ্ধে মানববন্ধন