গভীর রাতে চার উপদেষ্টা হাজির হয়ে দাবি বাস্তবায়নসহ বৈঠকের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সড়ক অবরোধ তুলে নিয়ে হাসপাতালে ফিরে গেছেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতরা। এসময় আহতদের যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিতের আশ্বাস দেন উপদেষ্টারা। বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় সচিবালয়ে আহতদের সঙ্গে কয়েক উপদেষ্টার বৈঠকের কথা জানানো হয় আন্দোলনরতদের।
সুচিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবিতে বুধবার দুপুর থেকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের সামনে শ্যামলী-আগারগাঁও সড়ক অবরোধ করে রাখে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহতরা। নিটোরের সামনে হাজির হয় আইন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ ও স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা। সঙ্গে ছিলেন, নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও প্রধান উপদেষ্টার স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষ সহকারী ডা. সায়েদুর রহমান। আহতদের দাবি নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা বলেন তাঁরা।
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেন, আমরা আমাদের যে ব্যর্থতা আছে, ঘাটতি আছে। সেখান থেকে শেখার চেষ্টা করছি। আপনারা যে রেগে আছেন, কষ্ট পাচ্ছেন, এটা খুবই স্বাভাবিক। মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আক্তার বলেন, আপনারা হাসপাতালে ফিরে যান। আমরা যে কথা দিয়েছি, আমাদের কথা রাখবো। আমরা যদি কথা রাখতে ব্যর্থ হই তাহলে আপনারা যেটা করবেন, সেটা আমরা মাথা পেতে নেবো।উপদেষ্টা আশ্বাসেও খুব একটা মন গলেনি আহতদের। পরে তাদের অভিযোগ শুনতে ও উন্নত চিকিৎসা নিয়ে করণীয় ঠিক করতে দিনক্ষণ ঘোষণা করেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বলেন, বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টায় সচিবালয়ে আহতদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে বৈঠক হবে। সেখানে আলোচনার ভিত্তিতে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করা হবে।
হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে ফিরে আসার সময় সব আহতদের ‘দেখতে না যাওয়ায়’ বিক্ষোভের মুখে পড়েন তিনি। তারা উপদেষ্টার গাড়ি আটকে দেন। কিছু সময় পর উপদেষ্টা ওই হাসপাতাল ত্যাগ করলে বেলা ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা শ্যামলী থেকে আগারগাঁও যাওয়ার সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন। উপদেষ্টা চলে যাওয়ার পর তারা পঙ্গু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ফটক বরাবর রাস্তাটির দুই পাশ আটকে দেন। রাস্তার উপর হুইল চেয়ার ক্রাচ হাতে কয়েকজন আহতকে বসে থাকতে দেখা যায়।
বুধবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জুলাই-অগাস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের দেখতে পঙ্গু হাসপাতালে যান স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।
পরে রাত ৮টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ সেখানে এসে কথা বলার চেষ্টা করেন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে। তবে আন্দোলনকারীরা তার কাছে দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে চাননি।
এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ‘জুলাই শহীদ ফাউন্ডেশন’র প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে আসেন। তিনি আহতদের সুচিকিৎসা ও প্রয়োজনে বিদেশে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে বিক্ষোভকারীদের হইচইয়ের স্নিগ্ধ কথা শেষ করতে পারেননি। বারবারই তাকে থেমে যেতে হয়।
আরও পড়ুন – প্রবাসীরা জুলাই-আগস্টের অভ্যুত্থানে বড় ভূমিকা রেখেছেন