পটুয়াখালীর গলাচিপায় দেয়ালে দেয়ালে গ্রাফিতি আঁকছেন বিভিন্ন স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মূলত জুলাই আন্দোলনের চিত্র আর ভবিষ্যত বাংলাদেশের রূপকল্প তুলে ধরা হচ্ছে এসব গ্রাফিতিতে। কিছুদিন আগেই রক্ত দিয়ে রাজপথ রাঙিয়েছেন যারা, সেই শিক্ষার্থীরাই এখন রং-তুলিতে দেয়াল রাঙাচ্ছেন। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতদের ছবিও স্থান পাচ্ছে এসবেদেয়াল চিত্রে। শিক্ষার্থীরা দেয়ালে দেয়ালে লিখছেন দেশ সংস্কারের নানা স্লোগান; বিভিন্ন শিল্পকর্মও আঁকছেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন এলাকার দেয়ালে শিক্ষার্থীদের দেয়ালচিত্র আঁকতে দেখা যায়। দলে দলে ভাগ হয়ে তারা রং-তুলিতে রাঙিয়ে তুলছেন শহরের দেয়াল। গলাচিপায় বসাবসরত বিভিন্ন বয়সের স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এ কর্মযজ্ঞে অংশ নেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, নতুন করে দেশ গড়ার প্রত্যয় তরুণদের। পুরো দমে দেশ সংস্কার করতে হবে বলে মনে করেন তারা। গত কয়েকদিন দেশে যে সহিংসতা হয়েছে, তা ভুলে গিয়ে এগিয়ে যেতে চান। সোমবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় গলাচিপা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গলাচিপা সরকারি কলেজ,মহিলা কলেজ ও প্রধান প্রধান সড়কের পাশে সব দেয়াল রং-তুলিতে শিক্ষার্থীরা রাঙিয়ে তুলেছেন। সড়কের মাঝখানেও এঁকেছেন নানা আল্পনা। শিক্ষার্থীদের এমন শিল্পকর্ম নজর কেড়েছে সাধারণ পথচারীদের। অনেকেই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছেন তাদের নানামুখী সৃজনশীল কর্মযজ্ঞ। এর মধ্যে রয়েছে একতাই বল, বীর বাঙালির অহঙ্কার, বাংলাদেশের মানচিত্র, সংগ্রাম, ঐক্য, দুর্নীতি, প্রাণ প্রকৃতি বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের একাধিক মুহূর্তসহ নানা বিষয়। সকাল ১১টার দিকে শহরের সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দেয়ালে শিল্পকর্ম আঁকছিলেন একদল শিক্ষার্থী।
তারা জানান, ‘আমাদের কর্মসূচি হলো ছাত্র আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন, রক্ত ঝরিয়েছে, তাদেরকে ঘিরে, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্য। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক স্লোগান, কথাবার্তা এবং উসকানিমূলক বাক্য লেখা ছিলো, যা অশোভনীয়। তাই আমরা দলবদ্ধ হয়ে দেয়াল রং করে দেশের ঐতিহ্য, শহীদদের স্মৃতি ও আন্দোলনের স্মৃতি ফুটিয়ে তুলছি।’ আরেক শিক্ষার্থী জানান, ‘আমরা সবাই মিলে এই আন্দোলন করেছি। সাধারণ মানুষও যুক্ত হয়েছিলেন। শহরের দেয়ালগুলোতে নানা ধরনের লেখা ছিল, যা দৃষ্টিকটু ও সমীচীন নয়। তাই এসব লেখা মুছে নতুন করে রাঙানোর কাজ করছি। তুলে ধরছি আন্দোলনের নানা স্মৃতি। যাতে পথচলতি শিশু-কিশোর থেকে বয়স্ক সবাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্মৃতি ভুলে না যান, সেজন্য গ্রাফিতি আঁকছি।’