বরগুনার আমতলী উপজেলায় ভুমি জরিপে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পরে আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর তারা নানা অভিযোগ তুলে স্মারকলিপি প্রধান করেন।
গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে আমতলী উপজেলা পরিষদের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা।
এ মানববন্ধনে আমতলীর টিয়াখালী মৌজার প্রায় পাঁচ শতাধিক ভুমি মালিকসহ ভুক্তভোগিরা অংশগ্রহন করেন।
এসময় বক্তব্য রাখেন,আমতলীর সদর ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম মিঠু মৃধা, ইউপি সদস্য সোহেল খান.শিক্ষক মো. ফিরোজ আলম.খালেক বিশ্বাস, আজিজ হাওলাদার , আনোয়ার হাওলঅদার,আব্দুল খালেক হাওলাদার, রেদৌস আকন, আমিনুল মৃধা হাশেম গাজীসহ প্রমুখ।
তারা আরও বলেন, আমতলী উপজেলাধীন ০৬নং আমতলী ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী মৌজায় ২০১৭ ইং সালে ভূমি জরিপ কার্যক্রম চলছিল। ইতিমধ্যে মাঠ জরিপে অনিয়ম ও দুর্নীতি পরিলক্ষিত হওয়ায় ০৬নং আমতলী ইউনিয়নের চেয়াম্যান মহোদয়ের মাধ্যমে মহমান্য হাইকোর্টে মামলা দায়ের করা হয়। যাহার প্রেক্ষিতে প্রায় ০৪ (চার) বছর উক্ত জরিপ কার্যক্রম স্থগিত থাকে। পরবর্তীতে ভুমি জরীপ কার্যক্রম শুরু হলে ভূমি মালিকগন জরীপ অফিসে গিয়ে দেখতে পায়,এক মালিকের জমি অন্য জনের নামে কিংবা মৃত ব্যক্তিদের নামে এবং জেলা প্রশাসকের নামে নামজারী করে ডিপি/পর্চা করিয়েছে এবং আধা শতাংশের কম জমিতেও ১টি দাগ/ডিপি করিয়েছে, যাহাতে ওয়ারিশ রয়েছে ৪ জন। এভাবে মনগড়া ইচ্ছামত নামে বে-নামে ও নাল জমি সরকারী খাসে ডিপি/পর্চা খুলিয়াছে।
উক্ত মৌজায় বি.এস দাগ হবে প্রায় ৫০০০ (পাঁচ হাজার) কিন্তু ৩০ ধারা কেস হয়েছে প্রায় ১১০০০ (এগার হাজার)।ইহাতে পরিলক্ষিত হয় যে, তারা পরিকল্পিত এবং মনগড়া কাজ করিয়াছেন। এই দাগ সংশোধন করতে হলে তারা প্রতি শতাংশ জমিতে ১০০০ (এক হাজার) টাকা উৎকোচ গ্রহনের মাধ্যমে বি.এস ডিপি/পর্চা করার কথা বলেন। প্রতিটি ডিপিতে ৩০ ধারা করতে হলে তাদেরকে (অফিস কর্মকর্তা) ৩০০ (তিনশত) টাকা দিয়ে ৩০ ধারা করতে হয়। ভূমি মালিক গনের সাথে কোন গনসংযোগ ও মাইকিং না করে তারা মাঠে ক্যামেরা দিয়ে নসকা তৈরী করে। ভুক্তভোগিরা উত্তর টিয়াখালী মৌজাবাসী পুনঃরায় ডিজিটাল ভূমি মাঠ জরিপ চাচ্ছে ।
৫২নং উত্তর টিয়াখালী মৌজাবাসী পটুয়াখালী ভূমি জরিপ সেটেলমেন্ট অফিসার (ইনচার্জ) এর দপ্তরে একধিকবার মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ করার পরেও কোন প্রকার প্রতিকার না পেয়ে ভুক্তভোগিরা মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেন। মহামান্য হাইকোট সেখানে ৩ মাসের মধ্যে উক্ত সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য বাদী পক্ষের অনুকূলে রুল জারি করেন। রিট পিটিশনের রুলের কপি পটুয়াখালী ভূমি জরিপ সেটেলমেন্ট অফিসার (ইনচার্জ) এর দপ্তরে গত ২/৪/২৪ ইং তারিখ বাদীপক্ষ পৌঁছে দেন এবং রিসিভ কপি স্বাক্ষর করিয়ে আনেন। কিন্তু রিট পিটিশন রুল অনুযায়ী ভুমি জরিফ অফিস কাজ করছেনা। আমতলী ভূমি জরিপ অফিসের অফিসার গন মহামান্য হাই কোর্টের নির্দেশ ও বিধি অমান্য করে তোর-জোর করিয়া মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ৩০ ধারা আপত্তির কার্যক্রম এখনো চালিয়ে যাচ্ছে।এসুযোগে এক শ্রেনীর দালালরা ও অসাধু কর্মকর্তারা কাগজ পত্র ঠিক করে দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ভুক্তভোগিরা অবিলম্বে ভুমি জরিপের এসব অনিয়ম বন্দের দাবী জানিয়েছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলাধীন সাবেক ৫২ নং বর্তমান ৩৪নং(বিএস) উত্তর টিয়াখালী মৌজায় ভূমি জরিপে অনিয়ম ও দূর্নীতি বন্ধের দাবীতে ভুমি মন্ত্রী , বরগুনা জেলা প্রশাসক, আমতলী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেন টিয়াখালী মৌজার ভুক্তভোগি জনসাধারন।
এব্যাপারে আমতলী উপজেলা ভুমি জরিপ অফিসের সহকারী সেটেল্টমেন্ট অফিসার এমদাদুল হক বলেন, অভিযোগ পেলে বিষযটি ক্ষতিয়ে দেখবো।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আশ্রাফুল আলম কে জানান, এবিষয়ে আমি একটি স্মারকলিপি হাতে পেয়েছি।
এটি জেলা প্রশাসক স্যার এবং ভূমি জরিপে যারা উর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়েছেন আমি তাদের কাছে পাঠাবো। তাছাড়া স্মারকলিপিতে তারা যে অভিযোগ করেছেন সেটা তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।