March 17, 2025, 12:04 pm
শিরোনাম :
গলাচিপার ইউএনও’র ফেসবুক পোস্ট নিয়ে বিতর্ক, আইডি হ্যাকের দাবি গলাচিপায় ইউএনও এবং খাদ্য কর্মকর্তা অপসারণের দাবিতে পক্ষে-বিপক্ষে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল গলাচিপায় গণঅধিকার পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল গলাচিপায় গণহত্যা ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা গলাচিপায় ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল গলাচিপার আমখোলার ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেফতার ঢাকাস্থ চালিতাবুনিয়া সমিতি উদ্যোগে ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত খুটির জোর কোথায়? ফিল্মি স্টাইলে স্কুল শিক্ষিকা থেকে মেয়র, কে এই জাকিয়া চিকিৎসকের অবহেলায় গলাচিপায় নবজাতকের মৃত্যু গলাচিপায় ৭ম জাতীয় ভোটার দিবস পালিত

গলায় ফাঁস দিয়ে কিশোরের রহস্যজনক মৃত্যু, ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন

স্টাফ রিপোর্টার, গলাচিপা ;
নিহত তাওরিন আহমেদ
নিহত তাওরিন আহমেদ

পটুয়াখালীর গলাচিপা গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাওরিন আহমেদ (২০) নামের এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করেছে পরিবার।

শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের বড়চত্রা গ্রামের নিজ বাড়ি হতে ঘরের সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

নিহত তাওরিন আহমেদ উপজেলা ডাকুয়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বড়চত্রা গ্রামের মাহাতাব হাওলাদারের ছেলে। তাওরিন ঢাকার উত্তরায় একটি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী ছিলেন।

তার এক বন্ধু (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, তাওরিন গাড়ি ও নেশার কারণে তার মৃত্যুের পথ বেচে নেয় নি, তার ফ্যামিলির কিছু লোকজন মিথ্যা বানোয়াট কথা বলে আসল ঘটনাকে চাপা দিতে চাচ্ছে, ও তার পার্সোনাল একটি বিষয়ে ফ্যামিলির চাপে ডিপ্রেশনে ভুগছিল পরবর্তীতে কোন সমাধান না পেয়ে এই মৃত্যুর পথ বেচে নিয়েছে। তার বাবা মায়ের প্রতি অনেক অভিমান ছিল সে আমাদের কাছে প্রায়ই বলতো বাহিরের কেউ যদি আমার কষ্ট না বুঝে তাতে আমার দুঃখ নেই, বাবা-মা তো বুঝবে তারাও আমার কষ্ট বুঝলো না।

তাওরিন এর মৃত্যুর দিন ফেসবুক পোস্ট:

এদিকে ঘটনার দিনগত রাত দুইটার দিকে তাওরিন আহমেদ Tawrin Ahammad নামের একটি ফেইজবুক আইডি থেকে এই পোস্ট হয় , ‘ভালো থেকো আব্বু-আম্মু। তোমাদের অনেক কষ্ট দিছি, তার জন্য আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ। তোমাদের আর কষ্ট দিতে চাইনা আমি তাই তোমাদের ছেড়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি, ভালো থেকো। তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও তোমাদের কষ্ট দেওয়ার জন্য।’

তাওরিন এর মৃত্যুর আগের ফেসবুক পোস্ট:

(ছেলে তাওরিন ও মেয়ে সুমির কোর্টম্যারেজ করে বিয়ের ছবি)

সেপ্টেম্বর ২০২৩ মাসে তওরিন আহমেদ Tawrin Ahammad নামের একটি ফেইজবুক আইডি থেকে এই পোস্টটি হয়, পরে আইডিতে এই পোস্টটি পাওয়া যায়নি।

আসসালামু আলাইকুম, আমার নাম তাওরিন

আমার সাথে যাকে দেখছেন তার নাম সুমি আমরা ২২/১১/২০২১ এ রিলেশন এ গেছি আমাদের রিলেশনের বয়স ১ বছর ১০ মাস ১৬/০৮/২০২৩ তাকে পালিয়ে নিয়ে ঢাকায় আসি ১৭/০৮/২০২৩ আমার বিয়ে করি। সে আমার সাথে ১১ দিন ছিল। ২৮/০৮/২০২৩ তার পরিবার তাকে জোর করে নিয়ে যায় আমার থেকে। কিন্তু সে যেতে চাই নি অনেক পাগলামি করেছে যাবে না বলে। ৭ দিনের ভিতরে আমার সাথে বিয়ে দিবে। তাকে এই মিথ্যা আশা দিয়ে নিয়ে গেছে বাড়ি। তার পরে তাকে জোর করে ভোলা নিয়ে যায় তার বোনের বাসায়। সেখানে নিয়ে তাকে বন্দী করে রাখে। তারা আমার পরিবারকে অনেক হুমকি ধামকি পুলিশের ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু আমার পরিবার কেউ জানতো না যে আমরা কোথায় আছি। ৯ দিন পর আমি আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে বলে। মেয়ের ফ্যামিলি মেয়েকে নিতে আসবে। না হলে আমার বাবা কে কেস দিবে অথবা জেলে দিবে। আমার বাবা বলে তোরা কোথায় আছিস আমাকে বল। আমি আমার পরিবারকে আমাদের লোকেশন বললাম। মেয়ের মা / (মেয়ের চাচা) পলাশ খান / হিরন খান সহ আমার বাবাকে হ্যারেজমেন্ট করেছে। মেয়ে তাদের হাতে না তুলে দিলে। আমার নামে এবং আমার বাবার নামে কেস করবে। আমার প্রিয় মানুষটার সাথে আজকে এই দশ দিন যোগাযোগ হয় না। আমি যদি আত্মহত্যা করি। তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবে।মেয়ের মা/ (মেয়ের চাচা) পলাশ খান, হিরন খান, এবং মকবুল খান।

(মৃত্যু আগে ফেসবুকে পোস্ট)

তাওরিনের মৃত্যু ও তার বিয়ের কথা তার বাবা মাহাতাব হাওলাদার এর কাছে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কথা না বলে এড়িয়ে চলে যান, থানায় কোনো অভিযোগ না দিয়ে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই বাড়ি নিয়ে যায়, এবং ৬ এপ্রিল রাত ১১ টায় লাশ দাপন করেন।

এ ঘটনার বিষয়ে গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদাউস আলম খান বলেন, তাওরিন ছিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে মারা গেছেন, এ বিষয়ে ফ্যামিলির কোনো অভিযোগ না থাকায় মুচলেকা নিয়ে লাশ পরিবারের কাছে দেয়া হয়েছে। অপর দিকে ময়নাতদন্ত বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এ ব্যাপারে ফ্যামিলির কোনো অভিযোগ/মামলা হয় নি। তবে মৃতের পরিবার ময়না তদন্তে রাজি না হওয়ায় লাশ মর্গে পাঠানো হয়নি, তবে এব্যাপারে ওসি তদন্তকারী কর্মকর্তা যদি মনে করে এখানে কোনো ঝামেলা নেই আর মামলার আয়ু যদি সিদ্ধান্ত দেয় তাহলে ময়নাতদন্ত হবে, আর যদি সে না বলে তাহলে হবে না। এটি সম্পূর্ণ আয়ুর ব্যাপার।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা