পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দী ইউনিয়নের ‘দয়াময়ী’ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠিত হয় নবাবী আমলে। প্রায় ৩০০ বছরের ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির নদীতে বিলীন হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ইতিমধ্যে মন্দিরের সিংহ দরজা সুতাবড়ীয়া নদীগর্ভে চলে গেছে।
মন্দির রক্ষায় এলাকার জনগনের উদ্যোগে ঐতিহ্যবাহী দয়াময়ী মন্দির প্রাঙ্গণে শুক্রবার দুপুর ১২ টায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত থাকেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি জনকণ্ঠে স্টাফ রিপোর্টার সাংবাদিক শংকর লাল দাস,উপজেলা কেন্দ্রীয় কালীবাড়ি কমিটির সভাপতি দিলীপ বনিক, পৌর কাউন্সিলর সমীর কৃষ্ণ পাল, সহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তবে স্থানীয়দের দাবী মন্দিরটি নদীগর্ভে বিলিনের পথে তাই সংস্কার করা না হলে বিলিন হয়ে যাবে। এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক শংকর লাল দাস।
উল্লেখ্য, জানা যায় বাংলা ১২০৮ সালে তৎকালীন জমিদার ভবানী শংকর সেন এ মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রায় ৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত মন্দিরটি। এর পশ্চিম পাশে রয়েছে আলাদা একটি শিব মন্দির। শিব মন্দিরের উপরিভাগ গম্বুজাকৃতির।
এক সময় মন্দিরে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে আসতেন অনেক ভক্ত। জমজমাট থাকত সারা গ্রাম। শীত মৌসুমে লোক সমাগম হতো অনেক বেশি। প্রতি বছর বাংলা মাঘ মাসের ১ তারিখে মন্দির এলাকায় এক মাসব্যাপী মেলা বসত। এ মেলা দয়াময়ী মেলা নামে পরিচিত ছিল। কলকাতা থেকে নামী যাত্রাদল এসে এ জনপদকে মাতিয়ে রাখত। বিভিন্ন এলাকার সাধু-সন্ন্যাসীরা এসে ভিড় জমাতেন। বর্তমানে তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে জীর্ণশীর্ণ অবস্থায় এ মন্দিরটি দাঁড়িয়ে আছে। নদী ভাঙনের হুমকির মুখে রয়েছে পাঠা বলির ঘর, কালী মন্দির, শিব মন্দির ও একমাত্র দিঘিটি।
এলাকাবাসী জানান, পুরোনো সভ্যতার নিদর্শন এ মন্দিরটি প্রত্নতত্ত্বের অমূল্য সম্পদ। কিন্তু সরকারি বেসরকারি কোনো পৃষ্ঠপোষকতা না থাকায় মন্দির আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।