মেয়ের ধর্ষণের ঘটনায় বখাটের নামে মামলা করে এলাকা ছাড়া ও হত্যার ভয়ে আতঙ্কে আছেন কিশোরীর বাবা। গলাচিপায় প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বকাটে কিশোর মারুফ (১৫) একই গ্রামের এক কিশোরীকে অপহরণ করে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউউিনিয়নের বড় গাবুয়া গ্রামে। এ ঘটনায় ওই কিশোরকে আসামী করে গলাচিপা থানায় নারী শিশু নির্যাতন আইনে শনিবার সকালে একটি মামলা দায়ের করেছে ভূক্তভোগী কিশোরীর বাবা। অভিযুক্ত কিশোর মারুফকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছে গলাচিপা
থানা পুলিশ।
মামলার বিবরণ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের বড়গাবুয়া গ্রামের মো. ফেরদাউস আকনের ছেলে মো. মারুফ একই গ্রামের গলাচিপা সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র। একই প্রতিষ্ঠানের সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী ধর্ষণের শিকার হওয়া ওই শিক্ষার্থীকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিতো বখাটে মারুফ। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষুব্দ বুধবার বিকেলে কিশোরোটি হরিদেবপুর থেকে বোনের বাড়ি আমখোলা ইউনিয়নের বাউরিয়া গ্রামে অটো রিক্সায় করে রওনা দেয়। পথে বখাটে কিশোরও ওই অটো রিক্সায় ওঠে। এসময় কিশোরীকে বলে ‘তোকে পথে নামিয়ে দিয়ে আমরা চলে যাব’। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পর গ্রামের একটি কাঁচা রাস্তা দিয়ে ভয় দেখিয়ে বড়গাবুয়ার ‘খলিল খানের’ পরিত্যাক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে মারুফ ওই কিশোরীকে নানা রকম ভয় দেখায়। রাতে কয়েকবার ধর্ষণের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ঘরের মধ্যে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করে। এ পর্যায়ে এলাকাবাসীর মধ্যে জানাজানির ভয়ে বৃহস্পতিবার ভোরে কিশোরীটিকে বাবার বাড়ির সামনে নামিয়ে মারুফ পালিয়ে যায়। এসময় মারুফ ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য কিশোরীটিকে ভয় দেখিয়ে শাসিয়ে যায়।।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মারুফের বাবা ফেরদাউস আকন বলেন, আমার ছেলে নাইনে পড়ে। ঘটনার রাতেও আমার ছেলে বাড়িতে ছিলো। কী ঘটছে আমি তা জানি না। আমিও এ ঘটনার প্রকৃত বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে কিশোরীরর বাবা বলেন, মারুফ এলাকায় বিভিন্ন মেয়েদের ইভটিজিং করে। প্রতিরোধ করার সাধ্য কারো নাই। আমার মেয়ের ঘটনাটি জানানোর জন্য থানায় রওনা দেই। আমি থানায় মামলা করার জন্য থানায় আসার পথে বড়গাবুয়া রব মৃধার বাড়ির কাছে ব্রিজের পাশে পথ রোধ করে মারুফের চাচা ফিরোজ আকন, জালাল আকন, জাহাঙ্গীর খানসহ ১০-১৫ জন মামলা না করার হুমকি দেয়। মামলা করলে এলাকা ছাড়া ও হত্যার হুমকি দেয় তারা। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
এ প্রসঙ্গে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফোরদৌস আলম খান বলেন, ভিকটিমকে উদ্ধার করে মেডিকেল টেস্টের জন্য পটুয়াখালী সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অপর দিকে অভিযুক্ত মারুফকেও গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরণ করেছি। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।