কেবল সাকিবকে একা কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উপায় নেই। দল হিসেবেই ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক সুজন।গত বিশ্বকাপে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে উজ্জ্বল ছিলেন সাকিব আল হাসান। গড়েছিলেন রেকর্ডের পর রেকর্ড। এবার তার কাঁধে অধিনায়কত্বের ভারও থাকায় আশা ছিল আরও বেশি। কিন্তু ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে তিনি যেমন ভীষণ মলিন, দলের অবস্থাও তেমন একেবারে সঙিন। বাংলাদেশের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনের মতে, সাকিব তার পুরো সামর্থ্যের ১০ ভাগও দিতে পারেননি মাঠে।
প্রথম দল হিসেবে ২০২৩ বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ দল। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ জিতে শুরু করার পর টানা ছয় ম্যাচ হেরেছে তারা। তাদের অবস্থান পয়েন্ট তালিকার নয়ে। অবস্থা এতই বেগতিক যে, আগামী ২০২৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের খেলা নিয়েও দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
সাকিবও রীতিমতো ধুঁকছেন। ছয় ম্যাচে ব্যাট হাতে স্রেফ ১৭.৩৩ গড়ে ১০৪ রান করেছেন তিনি। নেই কোনো ফিফটি। আর বল হাতে ৩৮.৮৩ গড়ে নিয়েছেন ৭ উইকেট। অথচ সবশেষ ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে ৬০৬ রান করার পাশাপাশি ১১ উইকেট নিয়েছিলেন তারকা অলরাউন্ডার।
শুক্রবার দিল্লিতে গণমাধ্যমের সামনে হাজির বিসিবির প্রভাবশালী পরিচালক সুজন। সাকিবের ব্যর্থতা নিয়ে তিনি বলেছেন, ‘সাকিব তো তার একশ ভাগের দশ ভাগও না (দিতে পারেনি), এটা সাকিবও বুঝে ভালো। এজন্যই তো ও ঢাকায় গিয়েছিল অনুশীলন করতে হয়তোবা। ও জানে যে, ও কতটা উদগ্রীব পারফর্ম করার জন্য। খালি ওর (নিজের) পারফরম্যান্স না, ও চায় যে দল জিতুক। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, দল পারফর্ম করতে পারছে না, জিততে পারছে না। ২০১৯ বিশ্বকাপে যেভাবে ও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে, অধিনায়ক হিসেবে (এবার) সেভাবে করতে না পারাও একটা কারণ হতে পারে।’
কেবল সাকিবকে একা কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর উপায় নেই। দল হিসেবেই ভালো করতে পারছে না বাংলাদেশ। এটাও মনে করিয়ে দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক সুজন, ‘এটা শুধু সাকিবের একার দোষ দিয়ে লাভ নেই। দলে তো সাকিব একা খেলে না, আরও ১০ জন খেলোয়াড় খেলে। অধিনায়কের দায়িত্বটা একটু ভিন্ন। কিন্তু খেলোয়াড় হিসেবে তো সবার দায়িত্ব এক। সাকিব যখন ব্যাটিং করে, সাকিব তো তখন অধিনায়ক না, তখন সে একজন ব্যাটার। যখন বোলিং করে, তখন সে একজন বোলার। দিনশেষে সব ব্যাটার-বোলারকে একই দায়িত্ব নিতে হবে।’
সুজনের দৃষ্টিতে, বিফল হওয়ার দায় খেলোয়াড়দের পাশাপাশি কোচ, কর্মকর্তাদেরও, ‘অধিনায়ক হিসেবে আপনাকে সেই সমালোচনা নিতেই হবে, এটা খুব স্বাভাবিক। আমার মনে হয়, সব সমালোচনা সাকিবের না, আমাদের সবার সমালোচনা (হওয়া উচিত)। বাংলাদেশ যখন আসে, তখন আমরা সবাই একটা দল। আমিও যেমন একটা অংশ, সেটা আমারও ব্যর্থতা। আমি মনে করি, ব্যর্থতাটা আমাদের সবার। আমরা ভালো করতে পারিনি।’