আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছে পটুয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মাঠে প্রচার প্রচারনা এবং কেন্দ্রে দৌড় ঝাঁপ ততই বেড়ে চলেছে। তবে এবার এ আসনে আগের তুলনায় সৎ, কর্মীবান্ধব, যোগ্যতাসম্পন্ন শক্তিশালী প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
আরও পড়ুন – পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর শিশু রাতুল হত্যার রহস্য ও ডাকাতির মালামাল উদ্ধার; আটক-২
কে আওয়ামী লীগের এমন হেভিওয়েট প্রার্থী এ নিয়ে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন মহলে চলছে জল্পনা কল্পনা। তবে এই দুই উপজেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মনে করছেন বৃহত্তর গলাচিপা থানার বিগত যোগ্যতা সম্পন্ন সংসদ সদস্য যেমন এমএলএ করিম মিয়া, এমএলএ মদু মিয়া তালুকদার, এমসি আব্দুল বারেক মিয়া, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আব্দুল বাতেন তালুকদার, এমপি আনোয়ার মিয়া, এমপি বাদশা চৌধুরী, বস্ত্র প্রতিমন্ত্রী আখম জাহাঙ্গীর হোসাইন এদের মতো হেভিওয়েট যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তির সাথে যার তুলনা করা যায় তিনি হলেন সাবেক বিজিবির মহাপরিচালক এবং রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবুল হোসেন এনডিসি, পিএসসি, পিইঞ্জিনিয়ার। অনেকের মতে, সাবেক এই সেনা কর্মকর্তা যোগ্যতার মাপকাঠিতে এদের সকলকে টপকে শীর্ষস্থানে আছেন। গলাচিপা ও দশমিনায় আবুল হোসেনের এত বেশি গণসংযোগ, পথসভা, কর্মীদেরকে নিয়ে উঠান বৈঠক, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন চিত্রের লিফলেট বিতরণ, প্রচার-প্রচারনা দেখে রীতিমতো অবাক হচ্ছেন সকলে। এসব গণসংযোগে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন কেন্দ্রীয় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ডাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ এবং গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলার তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এ ছাড়াও অনেক জনপ্রতিনিধি এবং পদবঞ্চিত আওয়ামী লীগের পোড়খাওয়া ও ত্যাগী প্রথম সারির অনেক নেতা তাঁর সঙ্গে গণসংযোগে অংশ নেন। এটা তাঁর জন্য একটা বড় প্রাপ্তি। আওয়ামী লীগের এসব সিনিয়র নেতৃবৃন্দকে পুঁজি করে তিনি দাপটের সঙ্গে গলাচিপা ও দশমিনার প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। এছাড়াও তিনি এলাকায় নিয়মিত ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।
আরও পড়ুন – ভয়ংকর সাকার মাছের রাজত্ব বুড়িগঙ্গায়, ছড়িয়ে পড়ছে সারাদেশে
কে এই আবুল হোসেন এবং দেশের জন্য কতটুকু তাঁর অবদান? এ সম্পর্কে আমরা একটু জেনে নেই। আবুল হোসেন হলেন পটুয়াখালী জেলার বৃহত্তর গলাচিপা থানা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পানপট্টি ইউনিয়নের মরহুম সামছুল হক প্রেসিডেন্টের সুযোগ্য ছেলে। ছাত্র জীবন থেকেই আবুল হোসেন অত্যন্ত মেধাবী, সৎ, বিনয়ী, মিষ্টি ও স্বল্পভাষী ছিলেন।
১৯৮১ সালের ২৭ ডিসেম্বর আবুল হোসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার্স কোরে কমিশণ লাভের মাধ্যমে সেনাবাহিনীতে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সেনা সদরদপ্তরের ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ শাখার জিএসও এবং ১৪ স্বতন্ত্র ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগ্রেডের ব্রিগ্রেড মেজর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি স্কুল অব মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সিনিয়র প্রশিক্ষক ও প্রধান প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ১৭ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্যাটালিয়ন, এক্সপোসিভ অর্ডন্যান্স ব্যাটালিয়ন-কুয়েত, স্পেশালওয়ার্কস অর্গানাইজেশন এবং বিজিবির সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন – গলাচিপায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবুল হোসেনের ব্যাপক গণসংযোগ
আবুল হোসেন বিভিন্ন সরকারের বিভিন্ন পূর্ত কাজে জড়িত ছিলেন। তিনি চিম্বুক-থানচি সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার ছিলেন। এছাড়া ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পূর্ত পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী ছিলেন। তিনি এমআইএসটির কমান্ডান্ট ও সশস্ত্র বাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইন চীফ ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরির কমান্ডান্ট হিসেবেও নিয়োজিত ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট অব আজীবন ফেলো এবং এশিয়া প্যাসিফিক সেন্টার ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ, ইউএসএ এর একজন সম্মানিত ফেলো।
মেজর জেনারেল আবুল হোসেন ২০১৬ সালের ২ নভেম্বর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর মহাপরিচালক হিসেবে সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হন। ১৬ নভেম্বর তিনি তাঁর দপ্তর শুরু করেন। বিজিবির মহাপরিচালক হওয়ার পূর্বে তিনি রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব ছিলেন।
আরও পড়ুন – গলাচিপা উপজেলা চেয়ারম্যান-ইউএনও জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান ও প্রশাসন নির্বাচিত
আবুল হোসেন বিদেশে সামরিক ও পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে অংশ নেন। এছাড়াও তিনি মোজাম্বিক এবং অপারেশন কুয়েত পুনর্গঠনে অংশ নিয়েছেন। বিজিবির মহাপরিচালক হওয়ার পর তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে তাঁর বর্ণিল ও বিস্ময়কর কর্মময় জীবন সমাপ্ত করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক।
ঢাকার হাতির ঝিল প্রকল্প, হানিফ ফ্লাই ওভার, চট্টগ্রামের মেরিন ড্রাইভ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি জেলার দুর্গম পাহাড়ের ভিতর দিয়ে দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ এবং প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অতি দ্রæত ও দক্ষতার সাথে মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীকে পুনর্বাসনের মাধ্যমে নিজের সততা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন আবুল হোসেন।
আরও পড়ুন – পটুয়াখালীতে চাঞ্চল্যকর শিশু রাতুল হত্যার রহস্য ও ডাকাতির মালামাল উদ্ধার; আটক-২
এ সম্পর্কে আবুল হোসেন বলেন, ‘সেনাবাহিনীর কর্মময় জীবনে আমি দেশের জন্য কাজ করেছি। নিজের জন্মভূমির জন্য দৃষ্টান্তমূলক কিছু করার জন্য মনটা সবসময় ছটফট করছিল। তাই এবার গলাচিপা ও দশমিনাবাসীর সমর্থন ও ভালবাসা নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের ভাটির দেশের অসহায় মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। এলাকার নদী ভাঙন, রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন, বেকার যুবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, কৃষি ও মৎস্য শিল্পকে আধুনিকতার ছোঁয়ায় আরো উন্নত ও সমৃদ্ধ করার মহাপরিকল্পনা আমার আছে। এসব জনসেবামূলক কাজ করতে পারলে সেটা হবে আমার জন্য সদকায়ে জারিয়ার কাজ। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। আজ বাংলাদেশ বিশ্বে ৩৫ তম অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এটা আমাদের গৌরবের বিষয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের এই অভূতপূর্ব উন্নয়ন বিশ্বের অনেক রাষ্ট্র নায়ককে রীতিমতো বিস্মিত করেছে। উন্নয়নের এই ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকলকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার উদাত্ত আহবান জানাই।’