পটুয়াখালীর দশমিনায় লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবুল হোসেনের গণসংযোগ, পথসভা ও নৌকার প্রচার মিছিল হয়েছে। আবুল হোসেন সাবেক বিজিবির মহাপরিচালক এবং রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব। তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। আগস্টের শোকের মাস শেষ হওয়ার পরে তিনি আবারো দশমিনায় গণসংযোগ শুরু করেছেন।
গত বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার (৭, ৮ ও ৯ সেপ্টেম্বর) একটানা তিন দিন তিনি দশমিনা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গণসংযোগ, পথসভা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবগের্র সাথে মতবিনিময় করেন। এসময় তাঁর পথসভা জনসমুদ্রে রূপ নিয়েছে। তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাঁর পথসভায় অংশ নেন। হেমিলনের বাঁশিওয়ালার সুরের মুর্ছনায় যেন পাগলপ্রায় সাধারণ জনতা ছুটছে গণজোয়ারে ভাসা আবুল হোসেনের দিকে। সাধারণ জনতা আবুল হোসেনের মুগ্ধতায় আপ্লুত হয়ে প্রাণভরে তাঁর বক্তব্য শুনছেন। এসময় নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের প্রচার ও শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তোলে পুরো এলাকা।
তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রনগোপালদি ইউনিয়নের গুলি আউলিয়াপুর ব্রিজ বাজার, শুক্রবার বিকালে আলীপুরা ইউনিয়নের আলীপুরা বাজার এবং শনিবার বিকালে বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের গছানি বাজারে গণসংযোগ ও পথসভা করেন।
এসময় তিনি শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের চিত্র তুলে ধরে উপস্থিত জনসাধারণকে আবারো নৌকায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় আনার উদাত্ত আহবান জানান।
জানা গেছে, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবুল হোসেন সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর চীফ ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি বাংলাদেশের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত ব্যুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার। শেখ হাসিনার নির্দেশে বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি, বান্দরবন ও খাগড়াছড়ি অঞ্চলের দুর্গম পাহাড়ের মধ্য দিয়ে অনেক ফোরলেন, সিক্সলেন দৃষ্টিনন্দন সড়ক নির্মাণ তাঁরই তত্তাবধানে হয়েছে। এর ফলে দীর্ঘ দিন ধরে উপজাতিদের চাপা ক্ষোভের অবসান হয়েছে। ঢাকার হাতির ঝিল প্রকল্প, অনেক ফ্লাইওভার ও পদ্মাসেতুর নকশা তৈরির কাজও তিনি দক্ষতার সাথে করেছেন। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পাশর্বর্তী রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত মৃতপ্রায় লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরনার্থীদেরকে তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে ও তাদেরকে অতিদ্রæত পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে যুগান্তকারী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যার ফলশ্রুতিতে বিশ্বে বাংলাদেশের মান সমুন্নত ও উজ্জ্বল হয়েছে এবং শেখ হাসিনা হয়েছেন প্রশংসিত। সময়োপযোগী, দুঃসাহসিক ও মহান এই পদক্ষেপের জন্য আবুল হোসেন শেখ হাসিনার কাছে বিশ্বস্থতা অর্জন করেছেন এবং সীমাহীন ধৈর্য, সততা ও যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন।
পথসভায় আবুল হোসেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা, সোনার মানুষ গড়ার। শেখ হাসিনার স্বপ্ন এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার। শেখ হাসিনার সুদূরপপ্রসারি পরিকল্পনা, দুঃসাহসিক বাস্তব পদক্ষেপ ও যোগ্য নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে উন্নয়নশীল দেশের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। শেখ হাসিনা উন্নয়নের রোল মডেল, বাংলাদেশ বিশ্বের বিস্ময়। ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ ২০টি অর্থনীতির একটি দেশ হবে। আর ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও তথ্য প্রযুক্তিসম্পন্ন এক স্মার্ট বাংলাদেশ। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শেখ হাসিনা দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চলে ব-দ্বীপ প্লানসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছেন। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উপকূলীয় দক্ষিণাঞ্চলের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হবে এবং এখানকার মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের এই ধারাবাহিক উন্নয়নে আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করে আপনাদের সহযোগিতা ও ভালবাসা নিয়ে গলাচিপা ও দশমিনাকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসিয়ে দিয়ে মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমি বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাই। কৃষি ও মৎস্য শিল্পকে আরো আধুনিক ও উন্নত করতে চাই। নৌকার কান্ডারী হয়ে সারা জীবন আপনাদের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে চাই। অতি অল্প সময়ে আপনাদের এত ভালবাসা আমি পাব তা ভাবতেও পারিনি। এই ভালবাসার ঋণ আমার কাজের মধ্য দিয়ে শোধ করতে চাই। শেখ হাসিনা সরকারের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. মস্তফা সিকদার, কেন্দ্রীয় যুবলীগের সহ-সম্পাদক মু. মামুন আজাদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ দক্ষিণের সহ-সভাপতি ও গলাচিপা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. নিজাম উদ্দিন, দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যান বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম হিরন, আলীপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন মুন্সি, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ফরিদ উদ্দিন, দশমিনা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত সেনাকল্যাণ এসোসিয়েশনের সভাপতি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সরোয়ার কামাল, অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনাকল্যাণ সংস্থা (বেসওয়া) ট্রাস্ট গলাচিপা উপজেলা শাখার সভাপতি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. হাফিজুর রহমান, আলীপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা খালেদুর রহমান পলাশ প্রমুখ।
এ ছাড়াও দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ, সহযোগী ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ পথসভায় উপস্থিত ছিলেন।