‘বঙ্গবন্ধু ছিলেন স্বাধীনতা ও মুক্তিকামী বাঙালির মুক্তিদূত; নির্যাতিত, নিপীড়িত, নিষ্পেষিত বাঙালির নির্ভরতা ও আস্থার প্রতীক। স্বাধীনতার ডাকে ঘুমন্ত বাঙালিকে তিনিই জাগিয়েছিলেন তাঁর অফুরন্ত ভালবাসা দিয়ে। তিনি বাঙালিকে এনে দিয়েছেন স্বাধীনতা, লাল-সবুজ পতাকা ও মানচিত্র। বিনিময়ে বিশ্বাসঘাতক মীর জাফরের অনুসারী খন্দকার মোশতাক ও তার সহযোগী নিকৃষ্ট বাঙালিরা নিষ্ঠুরতার চরম শিখরে উঠে বুলেটের আঘাতে বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
যেমনিভাবে স্বাধীন বাংলার প্রথম সূর্য অস্তমিত হয়েছিল ১৭৫৭ সালে পলাশীর আ¤্রকাননে বাংলার শেষ নবাব সিরাজউদ্দৌলার পতনের মধ্য দিয়ে, তেমনিভাবে স্বাধীন বাংলার দ্বিতীয় সূর্য আবার অস্তমিত হয়েছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার মধ্য দিয়ে। এ নৃশংস হত্যাকান্ড বাঙালির ললাটে এঁকে দিয়েছে কলংকের ছাপ। সেদিন মুক্তিকামী বাঙালি কেঁদেছে পিতার জন্য। ওরা ইতিহাসের পাতায় ঘৃণিত ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত। ওদের প্রেতাত্মারাই নতুন করে বাংলার শান্ত মাটিকে আবার অশান্ত করে তুলেছে। ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে নৌকাকে বিজয়ী করে ওদের সমোচিত জবাব দিতে হবে।
আরও পড়ুন- দুর্গম চরে জাতির পিতাকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানালেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব,) আবুল হোসেন
বিশ্ব মানবতার জননী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, প্রধানমন্ত্রি জননেত্রী শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কয়েক ধাপ এগিয়ে যাচ্ছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে আধুনিক ও উন্নত তথ্য প্রযুক্তি সম্পন্ন এক বিস্ময়কর স্মার্ট বাংলাদেশ। আর এর সুফল দেশের প্রতিটি নাগরিক ভোগ করবে। শেখ হাসিনা দক্ষিণের উপকূলীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলাসহ অনেক মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। যার ফলশ্রæতিতে দক্ষিণাঞ্চল হবে উন্নয়নের রোল মডেল। হাজার হাজার বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। উন্নয়নের এই মহাকর্মযজ্ঞে আমি নিজেকে সম্পৃক্ত করতে চাই। আপনাদের সেবায় নিজেকে আত্মনিয়োগ করতে চাই। আপনাদের ভালবাসা, দোয়া ও সমর্থন নিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার কান্ডারী হয়ে গলাচিপা-দশমিনার গণমানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও উন্নয়নে কাজ করতে চাই।’
সোমবার (২১ আগস্ট) সন্ধ্যায় পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের জোলেখা বাজারে আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন সাবেক বিজিবির মহাপরিচালক এবং রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আবুল হোসেন। তিনি আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এর আগে আবুল হোসেন সকালে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহত দশমিনা উপজেলার পশ্চিম আলীপুরা গ্রামের ছাত্রনেতা মামুন মৃধার সমাধিতে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য বিন¤্র শ্রদ্ধা জানান। পরে তিনি গলাচিপা উপজেলার চিকনিকান্দি ইউনিয়ন, গলাচিপা সদর ইউনিয়ন ও গলাচিপা পৌরসভায় আওয়ামী লীগ কর্তৃক আয়োজিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবসে অংশগ্রহণ করেন। এ সময় তিনি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও বিভিন্ন বাজারে গণসংযোগ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. দুলাল চৌধুরী, পানপট্টি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালাম, পানপট্টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মেলকার, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য মো. বাহাদুর হাওলাদার, গলাচিপা উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. নুরুল ইসলাম ধলা, গোলখালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল খালেক মিয়া, গলাচিপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক ও গলাচিপা রিপোর্টার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাজ্জাদ আহমেদ মাসুদ, গলাচিপা রিপোর্টার্স ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গলাচিপা পৌর আওয়ামী লীগের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রুবেল, পটুয়াখালী জেলা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট মো. মামুন খান, গলাচিপা পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও গলাচিপা সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম বাচ্চু, দশমিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম হিরণ, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ফরিদ উদ্দিন, দশমিনা উপজেলার অবসরপ্রাপ্ত সেনাকল্যাণ এসোসিয়েশনের সভাপতি সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সরোয়ার কামাল, অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশ সেনা কল্যাণ সংস্থা (বেসওয়া) ট্রাস্ট গলাচিপা উপজেলা শাখার সভাপতি মো. হাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মো. মাইন উদ্দিন প্রমুখ। এ ছাড়াও গলাচিপা এবং দশমিনা উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।