আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা.. . পরই বরগুনায় বেশ কিছু নেতাদের নাম ইতোমধ্যেই গণমানুষের আলোচনায় এসেছে। ইতিমধ্যে বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন লাভের জন্য বিভিন্ন লবিং ও তদবির চালাচ্ছেন। এদের মধ্যে দৌঁড়ঝাপে রয়েছেন (৫) জন।
এরা হলেন- বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক,ও জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর কবির, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আব্দুল মোতালেব মৃধা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বরগুনা পৌরসভার সাবেক মেয়র, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাডভোকেট মোঃ শাহজাহান, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম -সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন হিমু মোল্লা।
ইতোমধ্যে বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের একটি অংশের সমর্থন লাভ করেছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ জাহাঙ্গীর কবির। তিনি ছাত্র জীবন থেকেই সক্রিয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। প্রায় তিন দশক ধরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং বরগুনা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আলহাজ্ব আব্দুল মোতালেব মৃধা তিনি বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ন- সাধারন সম্পাদক হিসেবে দীর্ঘদিন সুনামের সহিত দয়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি দলের প্রতি ছিলেন নিবেদিত সৈনিক। মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণের পর তিনি কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এক সময় সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বরগুনায় প্রতিবাদকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। সক্রিয় এই রাজনীতিবিদ তার রাজনীতির পাশাপাশি স্থানীয় একটি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করে তিনি জীবন জীবিকা নির্বাহ করেছেন। তিনি বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে একজন আশাবাদী মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এ্যাডভোকেট মোঃ শাহজাহান বরগুনা পৌরসভার দু-দুবার নির্বাচিত মেয়র হিসেবে অত্যন্ত সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আইন ব্যবসার পাশাপাশি জেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। বরগুনা জেলার বিভিন্ন উন্নয়নমুখী আন্দোলন সংগ্রামে তার একনিষ্ঠ ভূমিকা রয়েছে। বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য একান্তভাবে প্রত্যাশী বলে জানা গেছে।
আব্বাস হোসেন মন্টু মোল্লা একজন সক্রিয় আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি দীর্ঘদিন যাবত জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অত্যন্ত সফলতার সাথে বরগুনা সদর উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। আসন্ন বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে তিনি চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী।
এছাড়াও বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বচানে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে, অ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন হিমু মোল্লা পারিবারিক সূত্রেই তিনি আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত।
জানা যায়, তিনি বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী। গত ১৯৮১ সালে তিনি বরগুনা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৮৭ সালে তিনি বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও ১৯৯১ সালে তিনি জেলা যুবলীগের সহ সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন, বরগুনা জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনিও দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য প্রত্যাশী।এছাড়াও আরো বেশ কয়েকজন নেতার নাম শোনা যাচ্ছে দলীয় মনোনয়ন প্রার্থী হিসেবে।
আরও পড়ুন – বরগুনায় জাল সার্টিফিকেটধারী অধ্যক্ষের অপসরন ও গ্রেফতারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন
এবিষয়ে প্রবীন এক রাজনিতিবীদ বলেন, জেলা পরিষদ স্থানীয় সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। সেখানে যারা কাজ করতে পারবেন, যারা জেলার মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য তেমন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। দলীয় সভানেত্রী বিভিন্ন মাধ্যমে খোঁজ খবর নিচ্ছেন, ত্যাগী ও পরীক্ষিতদেরই মূল্যায়ন করা হবে জেলা পরিষদ নির্বাচনে। দুই মেয়াদে যাঁরা জেলা পরিষদের দায়িত্বে ছিলেন এবার তাঁদের অধিকাংশই বাদ পড়বেন দলীয় মনোনয়ন থেকে। এবার নতুন মুখ এবং দুঃসময়ের কর্মীদের মূল্যায়ন করতে চান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বরগুনা জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও বর্তমান ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আজিজুল হক স্বপন এর কাছে জেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের ত্যাগী ও প্রবীণ নেতাদের মূল্যায়ন করবে আওয়ামী লীগ। যারা দীর্ঘদিন ধরে দলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত সেসব নেতাকে এবার মূল্যায়ন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, জেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের দুঃসময়ের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের মূল্যায়ন করা হবে। সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন সংস্থা, নিজস্ব টিম, দলের সাংগঠনিক টিমের মাধ্যমে খোঁজখবর নিচ্ছেন। বিশেষ করে ১৯৭৫-এর পর যাঁরা দুঃসময়ে দলের হাল ধরেছিলেন এমন নেতাদের প্রাধান্য দেওয়া হবে এবং যারা যোগ্য তাদেরকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে বলে তিনি দাবি করেন।
বরগুনা পৌরসভার সুযোগ্য মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.কামরুল আহসান মহারাজ তিনি বলেন, যারা ছিলেন দলের দুঃসময়ের কর্মী, জনপ্রিয়, নিষ্ঠাবান এবং যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে তাঁদেরকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া উচিৎ।
তিনি আরও জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যাঁরা দলের হাল ধরে ছিলেন, নির্যাতন, কষ্ট সহ্য করেছেন, যাঁরা বুকে পাথর বেঁধে দল করেছেন, সেসব নেতাকে দলীয় মনোনয়নে প্রাধান্য দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমি চাই যোগ্যরাই আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন পাবেন।
নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৭ অক্টোবর ৬১ জেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ হবে। এসব জেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব ।