বরগুনায় ১৫ ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবসের দিনে আলোচনা সভা শেষে বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনেই জেলা ছাত্রলীগের উপর দুর্বৃওদের হামলা ও পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মেহেদী হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এসময় তিনি জানান, গত সোমবার জাতীয় শোক দিবসের দিনে ছাত্রলীগের উপরে সংঘর্ষের সময় পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছিলো। এ ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এস এম তারেক রহমানকে প্রধান করে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে(পাথরঘাটা সার্কেল) তোফায়েল হোসেন সরকার ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের পাবলিক রিলেশন অফিসার (ইন্সপেক্টর) মো: শাহবুদ্দিন খানকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এবিষয়ে গত(১৫ আগস্ট) রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে শোকসভা অনুষ্ঠানে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বরগুনা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু (এমপি) তিনি পুলিশকে দায়ী করে বলেন, বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোহাররম আলীকে বরখাস্ত করার দাবি জানান।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখুক এবং তাকে বিচারের আওতায় আনুক। আমি যেখানে উপস্থিত সেখানে তিনি এমন কাজ করতে পারেন না। আমি তাকে মারপিট করতে নিষেধ করেছিলাম। তারা (পুলিশ) আমার কথা শোনেনি।
আরও পড়ুন- বরগুনায় শোক দিবসকে কেন্দ্রকরে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত শতাধিক
এছাড়াও তিনি বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের পরামর্শ ছাড়াই জেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনের আগে কাউন্সিল বাধ্যতামূলক, এ কমিটি দেওয়ার আগে সেটাও করা হয়নি। ছাত্রলীগ করতে প্রধানমন্ত্রী যে ৫ শর্তের কথা বলেছেন, সে শর্তগুলো এই কমিটিতে মানা হয়নি৷ বিষয়টি আমরা আমাদের রাজনৈতিক অভিবাভকদের জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশনা আসার অপেক্ষায় রয়েছি।
বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের নব নির্বাচিত সভাপতি রেজাউল কবির রেজা বলেন, আমরা জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ফুল দিয়ে জেলা শিল্পকলায় প্রবেশ করি। এসময় শিল্পকলার ছাদ থেকে অচেনা কিছু দুর্বৃওকারী কিছু লোক আমাদের টার্গেট করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। তাদের ইট-পাটকেল নিক্ষেপের কারণে বরগুনার এএসপির গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে লাঠিচার্জ শুরু করে।
তিনি আরও বলেন,আমাদের ওপরে পরিকল্পিতভাবে হামলা করে ছাত্রলীগের নামধারী কিছু সন্ত্রাসীরা।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ও তদন্ত কমিটির প্রধান এস এম তারেক রহমানের বক্তব্য নিতে একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও সম্ভব হয়নি ।
প্রসঙ্গত, ১৫ আগস্ট দুপুর ১২টার দিকে শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি কমপ্লেক্সে ফুল দিতে যায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে ফেরার সময় শিল্পকলা একাডেমির সামনে পৌঁছালে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপের সদস্যরা তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে দুই গ্রুপের নেতা-কর্মীরা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে আহত হন ৬০ জন।