বরগুনার বেতাগী উপজেলা প্রশাসনকে সাঁজাতে যিনি সার্বক্ষনিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এদের মধ্যে একজন (ইউএনও)-সুহৃদ সালেহীন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যখন সারাদেশে সৎ,আদর্শবান ,ভদ্র,মার্জিত কর্মকর্তাদের প্রতিটি উপজেলায় একজন করে ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। সে হিসেবে বলা যায়, বেতাগী উপজেলাবাসীর আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে ইউএনও সুহৃদ সালেহীনকে পেয়েছেন। যোগদানের পর থেকে আজ পর্যন্ত নিয়মিত অফিস করে আসছেন। যার ভিতরে নেই কোন অহমিকা, নেই কোন গাম্ভির্য্যতা,যিনি প্রতিনিয়ত অসহায় মানুষের সেবায় নিয়োজিত রয়েছেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় জমিসহ আধাপাকা ঘর পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছেন বরগুনার বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের কাজিরহাট বাজার সংলগ্ন ভূমিহীন ও গৃহহীন দরিদ্র পরিবারগুলো।
ভূমিহীন পরিবারগুলো উপহারের ঘরে আশ্রয় পেয়ে এখন সবজি উৎপাদন, নদীতে মৎস্য আহরণ, হাঁস-মুরগি পালনসহ ক্ষেত খামারে কাজ করে নিশ্চিন্তে উপার্জন করে স্বচ্ছন্দে দিনাতিপাত করছে।
উপহারের ঘরে আশ্রয় পাওয়া পরিবারগুলো জানান, তারা কোনোদিন ভাবেননি মাথা গোঁজার মতো নিজেদের একটি ঠিকানা হবে।
বিধবা ও পঙ্গু ঝর্ণা বেগম বলেন, তিনবছর পূর্বে স্বামীর মৃত্যুর পরে একমাত্র প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না। মানুষের বাড়িতে গৃহস্থালির কাজ করে অতিকষ্টে জীবন যাপন করেছি।
কবির ফরাজি ও কোহিনুর বেগম বলেন, বিনামূল্যে ঘরসহ জমি পেয়ে আমরা অনেক খুশি।
বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের অন্ধ কেরামত আলী (৬৭) ও মল্লিকা আধাপাকা ঘর পেয়ে যেন আকাশের চাঁদ পেয়েছেন।
১৯৭০ সালে প্রলয়ঙ্কারী বন্যা ও জলচ্ছ্বাসে তার পরিবারের অনেকেই মারা যান। নদীগর্ভে তাদের জমিজমাও বিলীন হয়ে যায়। এতিম ও অসহায় কেরামত অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে পেট চালাতেন। পরে তিনি মল্লিকা বিবিকে বিয়ে করে বেতাগীর মানুষের বাড়িতে দিনমজুর হিসেবে কাজ করে জীবনযাপন করেন।
তিনি বলেন, তার দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে ১০বছর বয়সে তার মেয়েটি মারা যায়। জ্বরে অসুস্থ্য হয়ে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই অন্ধ হয়ে যান বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।
মল্লিকা বিবি আরো বলেন, ছেলে দিনমজুরের কাজ করে অতিকষ্টে আমাদের নিয়ে অন্যের জমিতে বসবাস করে। দারিদ্রের চাবুকে জর্জরিত স্বামী স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরসহ দুই শতাংশ জমি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়েছেন। উপার্জন বাড়াতে ছেলে হাঁস-মুরগি পালনের পাশাপাশি শাকসবজি চাষ করে সংসারে বাড়তি আয় করছেন বলেও জানান তারা।
এ দম্পতির মতো একই এলাকায় অনেক পরিবারকে মুজিব বর্ষের ঘর প্রদান করা হয়। উপহারের এ প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেকটি পরিবারের জন্য আধাপাকা ঘরে থাকছে ২টি থাকার কক্ষ, ১টি রান্নাঘর, ১টি টয়লেট ও ১টি বারান্দা এবং প্রতিটিঘরে বিদ্যুৎ সহ পাঁচটি ঘর মিলে পাচ্ছে একটি করে গভীর নলকূপ।
এ বিষয়ে বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: সুহৃদ সালেহীন বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী ভূমিহীন ও গৃহহীন দারিদ্র্য পরিবারগুলোর জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে ১২ টি হস্তান্তর করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯৯ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে বিনামূল্যে আধাপাকা ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ছাড়া তৃতীয় পর্যায়ে ৫০টি ঘরের নির্মাণকাজ প্রক্রিয়াধীন।