December 8, 2024, 2:55 am

স্বাস্ব্যেকে ফিট রাখতে ইসবগুল ভূসি, সেরে যাবে যেসব জটিল রোগ

স্বাস্থ্য টিপস;
ইসবগুল

ইসবগুল ‘গুল্ম’ জাতীয় গাছ। ইসবগুল উপমহাদেশের সবাই চেনে। ইসবগুলের ভুষি বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে যে অদ্রবণীয় ও দ্রবণীয় খাদ্য আঁশ থাকে তা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য খুব ভালো। ডায়রিয়া ও পাকস্থলীর ইনফেকশন সারায়। অ্যাসিডিটির সমস্যা প্রতিকার করে।

‘গুল্ম’ গাছটি কেমন: এই গাছটির ফুল ছোট, পাপড়ি সূক্ষ হয়। ইসবগুল গাছের উচ্চতা দেড়-দুই ফুটের পর্যন্ত লম্বা হয়। ফল দুইকোষ বিশিষ্ট, ৭-৮ মিলিমিটার লম্বা হয় এবং ফলের ভিতরে ৩ মিলিমিটার লম্বা বীজ থাকে। বীজ দেখতে নৌকার মতো এবং এর খোসায় পিচ্ছিল হয়। এটা এক ধরনের রবিশস্য। হেমন্তকালে বীজ বপন করা হয়। চৈত্র মাসে ফসল তোলা হয়।

ইসবগুল গাছ

নিচে ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার নিয়ম ও উকারিতা দেয়া হলো-

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া: যেকোনো কারণে প্রস্রাব হলুদ হয়ে জ্বালাপোড়া হলে সকালে এক গ্লাস ও বিকেলে এক গ্লাস শরবতের সাথে ইসবগুলের ভুসি খেলে প্রস্রাবের জ্বালাপোড়া চলে যায়।

মাথাঘোরা রোগে: যেকোনো কারণে মাথা ঘুরানি রোগ হলে বা হাত-পা জ্বালাপোড়া হলে সকাল-বিকেলে এক গ্লাস আখের গুড়ের শরবতের সাথে ইসবগুলের ভুসি মিশিয়ে এক সপ্তাহ খেলে উপকার পাওয়া যায়। ইসবগুলের মতো এমন নির্দোষ পেটপরিষ্কারক ওষুধ আবালবৃদ্ধবনিতা সবাই এটা খেতে পারে নির্দ্বিধায়।

অ্যাসিডিটি কমায়: ভুসিতে উপস্থিত ফাইবার পাকস্থলীতে একটি স্তর তৈরি করে। যা আমাদের অ্যাসিডিটির হাত থেকে রক্ষা করে। এছাড়া হজম প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে এ ভুসি। পেটের প্রায় সব ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসুবগুল হতে পারে এক উত্তম ওষুধ। এর মিউসিলেজিনাস ভূমিকার কারণে আলসারজনিত পেট ব্যথা কম মনে হয়।

কোষ্ঠকাঠিন্য: ইসবগুলের ভুসি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে দারুণ কাজ করে। ইসবগুলে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো এসিড রয়েছে। এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। ১ গ্লাস পানিতে চিনি বা গুড় মিশিয়ে খালি পেটে এ ভুসি খাবেন। প্রতিদিন ২ থেকে ৩ চা চামচ ইসবগুল ভুসি এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে দুই থেকে ৪ বার খেতে পারেন, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় সমাধান পাবেন।

অর্শ রোগ: আঁশসমৃদ্ধ খাবার ইসুবগুল। নিয়মিত ইসুবগুলের ভুসি খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। আমাশয় কিংবা অর্শরোগ থেকে দূরে থাকতে পারবেন। দ্রুত ফল পেতে দইয়ের সঙ্গে ইসুবগুল মিশিয়ে খেতে পারেন।

হজমের সমস্যা: হজমের সমস্যা দূর করে ইসবগুলের ভুসি। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে ইসুবগুলের ভুসি খেতে পারেন।

কোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ: এ ভুসি খেলে আমাদের অন্ত্রে একধরনের স্তর তৈরি হয়। কোলেস্টেরল ও উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং ওজন কমাতে চাইলে ইসুবগুলের ভুসি খেয়ে যান। ফলে আমাদের রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তাই হৃদরোগীদের জন্য দারুণ একটি খাবার এটি।

ডায়রিয়া প্রতিরোধ: অনেকেই ডায়রিয়ায় ভুগে থাকেন। ডায়রিয়া উপশমে বেশ উপকারে আসে ইসুবগুল ভুসি। ডায়রিয়া উপশমে জন্য দারুণ টনিক হলো ইসবগুলের ভুসি ও দই। এজন্য ৭-২০ গ্রাম ভুসি দিনে ২ বার খাওয়া যেতে পারে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ: ইসবগুলের ভুসিতে রয়েছে জিলাটিন নামক একটি উপাদান। যা দেহে গ্লুকোজের শোষণ ও ভাঙার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে। ফলে রক্তে সহজে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে না। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এ ভুসি খুবই উপযুক্ত। পাশাপাশি টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য এটা এক দারুণ পথ্য।

পাইলস রোগী: পাইলস রোগে আক্রান্ত হলে প্রতিদিন তিন থেকে চারবার ইসুবগুলের ভুসির শরবত খেতে পারেন।

ওজন কমায়: এতে ফাইবার উপস্থিত থাকায় হজম প্রক্রিয়া অনেক ধীরগতিতে হয়। তাই ক্ষুধা লাগে অনেক কম। এটি খেলে ওজন কমানো অনেক সহজ হয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে চা চামচ ইসবগুল ২৫০ মিলি কুসুম গরম পানির সঙ্গে ১-২ চা চামচ লেবুর রসের সঙ্গে মিশিয়ে নাস্তার পরে খেলে শরীরের ওজন কমে যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *


ফেসবুকে আমরা