পুলিশী বাধা, দলীয় কার্যালয়ে বারবার হামলা ও ভাংচুর করার পরেও বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হওয়ায় ঘুরে দাড়িয়েছে জেলা বিএনপি। ফলে দীর্ঘদিনের গ্রুপিং, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও দ্বন্দ্বের অবসান ঘটেছে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচী পালন করছে জেলা বিএনপি সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব ঝালকাঠি জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এতে জেষ্ঠ্য আইনজীবী সৈয়দ হোসেন আহ্বায়ক ও প্রথিতযশা আইনজীবী শাহাদাৎ হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়। সদস্য সচিব শাহাদাৎ হোসেনের মুখ্য ভূমিকায় আহবায়ক সৈয়দ হোসেনসহ অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে সাংগঠনিক কর্মকান্ডে প্রাণচাঞ্চল্যতা ফিরে আসে। পূর্বের অভ্যন্তরীন কোন্দল, গ্রুপিং বিভেদ নিরসন হয়ে মূলদল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলীয় কর্মসূচী একত্রে পালন করছে।
আরও পড়ুন- ঝালকাঠি জেলা পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভা অনুষ্ঠিত
জানাগেছে, ঝালকাঠি জেলা বিএনপিতে অভ্যন্তরীন কোন্দল ও গ্রুপিংয়ের কারণে দীর্ঘদিন যাবৎ নিষ্ক্রিয় ও ফটোসেশনে কার্যক্রম সীমাবদ্ধ ছিলো। নিজেদের মধ্যে দ্বন্ধ, কোন্দলের কারণে কেন্দ্রীয় ভাবে একাধিকবার সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিলো। সাংগঠনিক শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় বিএনপি নতুন করে ঝালকাঠি জেলা বিএনপিকে ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করে। স্বচ্ছ ইমেজের নেতা হিসেবে ঝালকাঠি জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান এড. সৈয়দ হোসেনকে আহবায়ক এবং জেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. শাহাদাৎ হোসেনকে সদস্য সচিব করে ৩৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রদান করে। আহবায়ক কমিটি গঠনের পরই শুরু হয় দলীয় কার্যক্রমে তৎপরতা। শহরের প্রাণ কেন্দ্র পূর্বচাঁদকাঠীতে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মধ্যবর্তি দলীয় কার্যালয় ভাড়া নেন। তারা ভবনে নতুন সাজিয়ে শুরু হয় দলীয় কর্মসূচী পালন। প্রথম দিকে ২/৩টি দলীয় কর্মসূচী স্বাভাবিকভাবে পালন করতে পারলেও নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ অংশগ্রহণে গাত্রদাহ শুরু হয় সরকার দলীয় লোকজনের। একারণে দফায় দফায় হামলা ও ভাংচুর করা হয় জেলা বিএনপির কার্যালয়। এর মধ্যেও বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচী পালন করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। সরকার দলীয নেতাকর্মীদের রক্ত চক্ষু, হামলা, ভাংচুর ও পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে সদস্য সচিব শাহাদাৎ হোসেনের পরিচালনায় দলীয় কর্মকান্ড পরিচালিত হয়। বাধা, বিপত্তি, হামলা ভাংচুরের পরেও থেমে যায়নি জেলা বিএনপির রাজনৈতিক তৎপরতা। জেলা বিএনপির অধীনস্থ ৪ উপজেলা ও ২ পৌরসভার আহবায়ক কমিটি করা হয়। সেই সাথে তৃণমূলের ৩২টি ইউনিয়ন ও ১৮টি পৌর ওয়ার্ডেও করা হয় মূলদলের কমিটি। এরপরে সম্মেলনের প্রতিনিধি উপস্থিত, ব্যালট-পেপার ও স্বচ্ছ ভোটের মাধ্যমে বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনসহ কেন্দ্রীয় অন্যান্য নেতাদের উপস্থিতিতে ৩টি সাংগঠনিক থানার পূর্নাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ঝালকাঠি সদর উপজেলা, নলছিটি উপজেলা ও পৌরসভা।
আরও পড়ুন- রাজাপুরে মায়ের চোখের সামনে ট্রলি চাপায় শিশু ছাত্রী নিহত
ঝালকাঠি পৌর, রাজাপুর ও কাঠালিয়া উপজেলা বিএনপির কমিটিও চলতি মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এডভোকেট শাহাদাৎ হোসেন। দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীরা জানান, অগোছালো বিএনপির যখন শৃঙ্খলায় আবদ্ধ করে অগ্রসর হতে শুরু করে তখনই সরকার দলের লোকজনের হামলা ভাংচুর ও পুলিশের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে নতুন কমিটিকে। বিশেষ করে কৌশল বিচক্ষনতা ও তার ঐকন্তিক প্রচেষ্টা ও অন্যান্য শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে পূর্বের চেয়ে বিএনপি এখন ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী।
বিএনপির আহ্বায়ক এ্যাডভোকেট সৈয়দ হোসেন জানান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে যে সকল কর্মসূচী কেন্দ্রীয়ভাবে ঘোষণা করে আমরা তা পালনের চেষ্টা করি। কর্মসূচী পালন করতে গেলেই ত্রিমূখী বাধার সম্মুখীন হই। সদস্য সচিব অ্যাডবোকেট মাহাদাত হোসেনের দৃঢ়তায় আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কর্মসূচী পালন করছি।