৭১বিডি২৪, লক্ষ্মীপুর:
এক নবজাতকের লাশ পড়ে আছে ময়লার স্তূপে। ছুটে এসে টানাহেঁচড়া করে ছিড়ে খাচ্ছে কুকুর। এমন অমানবিক ঘটনা ঘটেছে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতাল সংলগ্ন ময়লার স্তূপে। দাফন না করে এভাবে মৃত নবজাতকটিকে ময়লার স্তূপে ফেলে দেন হাসপাতালের আয়ারা।
হাসপাতাল সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার রাতে জনৈক লায়লা বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। সকালে তিনি একটি মৃতসন্তান প্রসব করেন। সন্তানটির বাবা ফজল করিম একটি কার্টন এনে মৃত নবজাতকটিকে নিতে চাইলে হাসপাতালের কর্তব্যরত সেবিকা রেহানা আক্তার ও আয়া আলেয়া বেগম বাচ্চাটিকে কৌশলে না দিয়ে দাফন করার জন্য ওই দম্পতির কাছ থেকে টাকা আদায় করেন। পরে ওই দম্পতি হাসপাতাল ত্যাগ করলে কর্তব্যরত আয়া আলেয়া বেগম নবজাতকের লাশ দাফন না করে হাসপাতালের পশ্চিম পাশের ময়লার স্তূপের পাশে খোলা মাঠে ফেলে দেন। হাসপাতাল আঙ্গিনায় শনিবার সকালে এমন মর্মানিক দৃশ্য দেখে মানুষের ভিড় জমে যায়।
এর মধ্যে নবজাতকের লাশ কুকুরে ছিঁড়ে খাচ্ছে দেখে ক্ষুব্ধ হন হাসপাতালের অন্যান্য রোগীর অভিভাবকরা। পরে এমন অমানবিক দৃশ্যের কথা গণমাধ্যম কর্মীরা জানতে পেরে ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে টনকনড়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আনোয়ার হোসেন অভিযুক্ত কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। নবজাতকের লাশ ময়লার স্তূপ থেকে উদ্ধার করে মর্গে রাখার ব্যবস্থা করা হয় বলেও জানান তিনি।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. গোলাম ফারুক ভূঁইয়া সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর শিশু ও নারী উন্নয়ন সংস্থা সিডব্লিউডিএ’র নির্বাহী পরিচালক পারভিন হালিম সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। সরকারিভাবে হাসপাতালের কর্মচারীদের বেতন ভাতা, বাসা বাড়িসহ নানা সুযোগ সুবিধা থাকে। অথচ এ ধরনের একটি অমানবিক ঘটনায় আমরা তাদের কাছ থেকে আশা করিনি। আসলে এ দেশে শিশু ও নারীদের সুরক্ষার জন্য কোনো কার্যক্রম চালু করা হচ্ছে না।’