বরিশাল মহিলা কল্যান সংস্থার আয়োজনে ও নিরাপদ গর্ভপাত অধিকারের দাবিতে প্রকল্প নারীপক্ষের সহযোগিতায় ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সকাল ১০.০০ ঘটিকায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবে আর্ন্তজাতিক মাসিক নিয়মিতকরন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা আনুষ্ঠিত হয়।
এবারে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় “ নিরাপদ মাসিক নিয়মিতকরণ অধিকারের জন্য আন্দোলন, সংহতি ও ন্যায়বিচার” আলোচনা সভায় বিএমকেএস এর পরিচালক কাওছার পারভীন এর সভাপত্বিতে অতিথি ছিলেন প্রফেসর শাহ-সাজেদা, প্রধান আলোচক ছিলেন ডাঃ রুনা লায়লা, মেডিকেল অফিসার(ক্লিনিক),জেলা মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র,বরিশাল , আরও উপস্থিত ছিলেন বাকেরগঞ্জ, বাবুগঞ্জ ও বরিশাল সদর উপজেলার নারী দলের সদস্যবৃন্দ, তারুন্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্মের সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকবৃন্দ।
ধারনাপত্র পাঠ করেন আলিফা, তারুন্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্মের সদস্য এবং অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন ময়ূরী আক্তার টুম্পা, সমন্বয়কারী সেচ্ছাসেবক, তারুন্যের কন্ঠস্বর প্লাটফর্ম ।
দিবসপালনের যৌতিকতা/ বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশে গর্ভপাত নিষিদ্ধ কিন্তু ১৮৬০ সালের পেনাল কোড অনুসারে শুধুমাত্র নারীদের জীবন বাঁচানোর জন্য গর্ভপাত আইন সম্মত করা হয়েছে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে সকল নারী ও কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন তাদের জীবন রক্ষায় ততকালীন সরকার গর্ভপাতের জন্য মাসিক নিয়মিতকরণের (এমআর) ব্যবস্থা চালুকরে। পরবর্তীতে বাংলাদেশে ১৯৭৯ সালে এমআর নীতি তৈরী করে এবং যা বর্তমানে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র (ঋডঈ) থেকে শুরু করে বিশেষায়িত হাসপাতালে (মেডিকেল কলেজ) এমআর সেবা ব্যবস্থা চালু আছে।
এমআরএম এর বর্তমান অবস্থা
*২০১৩ সালে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ওষুধের মাধ্যমে মাসিক নিয়মিতকরণ (এমআরএম) ব্যবস্থা চালু করা হয়
*২০১৪ সালে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়কর্তৃক সিনিয়র নার্সগনকে এমআর, এমআরএম এবং গর্ভপাত পরবর্তী (চঅঈ) সেবাপ্রদান করার অনুমোদন প্রদান করা হয়
* ২০১৫ সালে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর এমআরএম এর জাতীয় নির্দেশিকা বের করে
*২০১৫ সালে পরিচালক (এমসিএইচ-সার্ভিসেস) কর্তৃক এফডব্লিউভিগনকে ৯ সপ্তাহ পর্যন্ত এমআরএম করার অনুমোদন প্রদান করে পরিপত্রজারী করা হয়
*২০১৮ সালে মিডওয়াইফ দ¦ারা এমআর, এমআরএমও গর্ভপাত পরবর্তী সেবা (চঅঈ) প্রদান বিষয়টি ন্যাশনাল টেকনিক্যাল কমিটি (৭০তম মিটিং) কর্তৃক অনুমোদন ও প্রজ্ঞাপনজারী করা হয়
* ২০২১ সালে ন্যাশনাল টেকনিক্যাল কমিটি কর্তৃক ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত এমআরএম করার অনুমোদন প্রদান করা হয়
উপস্থিত অংশগ্রহনকারীদের সুপারিশ সমুহ :
* এমআরএম সেবা বিষয়ে সাধারণ জনগনের সচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ে জনগনের বিশেষ করে নারীদের এমআরএম এর ব্যবহার, পার্শ-প্রতিক্রিয়া এবং এর জটিলতা ও উপসর্গ সম্পর্কে স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রদান করতে হবে।কারণ এই ওষুধের কারণে নারীর পাশর্-প্রতিক্রিয়া বা জটিলতা হলে দ্রুত সেই নারীকে তাঁর পরিবারযাতে সঠিক সময়ে হাসপাতালে নিয়ে আসতে পারেন।
* জরুরী অবস্থায় হাসপাতালে আনার জন্য ব্যবস্থা করে রাখলে কোন রোগীর চিকিৎসা পেতে দেরী হবেনা এবং সঠিক সময়ে রেফারেলের কারণে অনেক মৃত্যু প্রতিরোধ করা যাবে।
*স্থানীয় জনগনকে এমআরএম এর ঝুঁকি চিহ্নগুলো সনাক্ত করতে এবং কোথায়, কখন ও কিভাবে রেফার করতে হবে এ বিষয়ে জানাতে হবে। কারণ মানসম্মত ও নিরাপদ মাসিক নিয়মিতকরণ সেবা পাওয়া নারীর অধিকার।
*ঔষধ বিক্রেতাদের এমআরএম কিড বিষয়ে প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা করতে হবে।তাই আসুন নিরাপদ মাসিক নিয়মিতকরণ অধিকারের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলি,সংহতি জানাই এবং ন্যায় বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিতকরি।